ফ্রিল্যান্সিং কি?-ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ সমূহ সম্পর্কে- বিস্তারিত জানুন
ফ্রিল্যান্সিং কি?-ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ সমূহ সম্পর্কে- বিস্তারিত জানুন
ফ্রিল্যান্সিং এর কাজসমূহ এবং ফ্রিল্যান্সিং কি তা যদি নতুন ফ্রিল্যান্সাররা ভালোভাবে শিখে নিতে পারে, তাহলে অল্প সময়ের মধ্যেই তারা একজন দক্ষ ফ্রিল্যান্সার হতে পারবে। তবে একজন অভিজ্ঞ ফ্রিল্যান্সার হওয়ার জন্য ধৈর্যশীল হতে হবে এবং প্রতিদিন কমপক্ষে ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা কম্পিউটারের সামনে সময় কাটানোর অভ্যাস করতে হবে। আজকের এই আর্টিকেলটি তাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ যারা নতুন করে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করতে চান।
আপনি কি ফ্রিল্যান্সিং এর জগতে নতুন? এই আর্টিকেলে আমরা জানবো ফ্রিল্যান্সিং এর কাজগুলো সম্পর্কে, পাশাপাশি জানবো ফ্রিল্যান্সিং কি, এর প্রকারভেদ, ফ্রিল্যান্সিং কাজ করার পদ্ধতি এবং এর ভবিষ্যৎ। এছাড়াও জানবেন ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে বাংলাদেশের লাভ। তাই অনুগ্রহ করে আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়ার চেষ্টা করবেন।
ফ্রিল্যান্সিং কি
ফ্রিল্যান্সিং বলতে বুঝায়, কোনও নির্দিষ্ট দক্ষতা ব্যবহার করে অনলাইনে বিভিন্ন কাজ সম্পন্ন করা এবং এর বিনিময়ে পারিশ্রমিক অর্জন করা। ফ্রিল্যান্সিং মূলত ঘরে বসে স্বাধীনভাবে কাজ করার একটি ক্ষেত্র হিসেবে ব্যাপক জনপ্রিয়। এটি মুক্তপেশা হিসেবে পরিচিত, কারণ এখানে কোনও নির্দিষ্ট নিয়ম বা সময়সূচী মেনে চলতে হয় না। যেমন একজন অফিস কর্মীকে প্রতিদিন অফিসে যেতে হয় এবং নির্দিষ্ট সময়ে কাজ করতে হয়, কিন্তু ফ্রিল্যান্সারদের জন্য এ ধরনের বাধ্যবাধকতা নেই।
একজন ফ্রিল্যান্সার নিজের ইচ্ছামতো ফ্রিল্যান্সিং কাজগুলো সম্পন্ন করতে পারেন। ফ্রিল্যান্সারদের সব কাজই ইন্টারনেটের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়। অনেক সময় দেখা যায়, একজন ফ্রিল্যান্সার চাকরিজীবীর চেয়ে বেশি অর্থ উপার্জন করেন। তবে নতুন ফ্রিল্যান্সারদের জন্য প্রধান সমস্যা হয় সঠিক গাইডলাইনের অভাব। একজন অভিজ্ঞ মেন্টর একজন এক্সপার্ট ফ্রিল্যান্সার তৈরি করতে পারেন। এজন্য ফ্রিল্যান্সারদের সঠিক গাইডলাইনের আওতায় থেকে কোর্স করা উচিত।
ফ্রিল্যান্সিং কত প্রকার
ফ্রিল্যান্সিংয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশের অনেক বেকার ব্যক্তি আজ উচ্চতায় পৌঁছেছেন। কম্পিউটারের মৌলিক জ্ঞান থাকলে এবং কাজের ইচ্ছা থাকলে, যে কেউ ফ্রিল্যান্সিংয়ে উন্নতি করতে পারে। তবে ফ্রিল্যান্সিংয়ে ধৈর্য ধরে কাজ করা প্রয়োজন। প্রথমদিকে আয় কম বা শূন্য থাকতে পারে, কিন্তু যদি কেউ ধৈর্য ধরে ফ্রিল্যান্সিং এবং তার বিভিন্ন কাজ সম্পর্কে যথাযথ জ্ঞান অর্জন করে, তাহলে তার ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল হতে পারে।
ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে আমরা ইতিমধ্যেই জেনেছি, এখন জানা উচিত ফ্রিল্যান্সিং কাজের বিভিন্ন ধরণের বিষয়গুলি। একটি বিষয় সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ জ্ঞান না থাকলে সেই ক্ষেত্রে এগিয়ে যাওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। যদিও ফ্রিল্যান্সিং কাজের বিভিন্ন ধরণের সংখ্যা নির্ধারণ করা কঠিন, কারণ এটি একটি বিশাল ক্ষেত্র। এখানে প্রচুর ধরণের কাজ রয়েছে। তবে, ফ্রিল্যান্সিং কত প্রকার তা না বলে, ফ্রিল্যান্সিং কাজের ধরণ কত প্রকার হলে বিষয়টি সহজ হয়ে যায়।
আরো পড়ুনঃ
যদিও ফ্রিল্যান্সিং একটি সাধারণ ধারণা, তবে এতে অনেক ধরণের কাজের সেক্টর আছে। নতুন ফ্রিল্যান্সাররা এই বিষয়টি বুঝতে পারেন যে, ফ্রিল্যান্সিং এর নিজস্ব কোনো প্রকারভেদ নেই, বরং এটি বিভিন্ন কাজের মাধ্যমে বিভক্ত। সুতরাং, একজন বিগিনার ফ্রিল্যান্সারের জন্য এসব সেক্টর সম্পর্কে জানা গুরুত্বপূর্ণ, যাতে তারা বুঝতে পারেন ফ্রিল্যান্সিং এ কত ধরণের কাজ রয়েছে।
নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী দক্ষতাকে বেছে নিতে হবে। একজন নতুন ফ্রিল্যান্সার যেটিতে আগ্রহী, সেটাই অনুসরণ করতে পারেন। আশা করি পাঠকগণ বুঝেছেন যে ফ্রিল্যান্সিং একক কোনো বিষয় নয়। এটি একটি ব্যাপক ক্ষেত্র, যেখানে বিভিন্ন ধরনের কাজ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এখন চলুন, ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে কত ধরনের কাজ রয়েছে তা বিস্তারিতভাবে জানার চেষ্টা করি।
ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ সমূহ
ফ্রিল্যান্সিং এখন একটি জনপ্রিয় এবং আয়ের একটি ভালো মাধ্যম হওয়ায়, অনেকে এই পেশা গ্রহণ করছেন। বাংলাদেশ সরকার বেকারদের সচ্ছল করার জন্য ফ্রিল্যান্সিং সেক্টর নিয়ে নানা উদ্যোগ নিচ্ছে। হাইটেক পার্কের মাধ্যমে ছেলেমেয়েদের ফ্রিল্যান্সিং বিষয়ে বিনামূল্যে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়, যা তাদের আয়ের পথ সুগম করছে। তবে, এখনও সরকার এমন কোন পদক্ষেপ নিতে পারেনি যার ফলে সবাই এই ফ্রি প্রশিক্ষণের আওতায় আসতে পারবে।
প্রশিক্ষণ নেওয়ার সুযোগ না থাকলেও চিন্তার প্রয়োজন নেই। আজকের এই নিবন্ধটি মনোযোগ দিয়ে পড়লে, একজন নতুন ফ্রিল্যান্সার হিসেবে আপনি অনেক কিছু শিখতে পারবেন। ফ্রিল্যান্সিংয়ের যেকোনো একটি বিষয়ে দক্ষ হয়ে উঠলে, আপনি একজন এক্সপার্ট ফ্রিল্যান্সার হতে পারবেন। নিচে ফ্রিল্যান্সিং কাজের বিভিন্ন দিক নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
গ্রাফিক্স ডিজাইন
দৈনন্দিন ব্যবহারিক জিনিসপত্র আমাদের অবশ্যই প্রয়োজন তাই সেই সকল কোম্পানিরও একজন গ্রাফিক্স ডিজাইনার সব সময় প্রয়োজন। সকালে ঘুম থেকে উঠে পেস্টের কভার থেকে শুরু করে ঘুমাতে যাওয়ার আগে যদি কোন ওষুধ সেবন করা হয়, সেটির কভার সবগুলোই গ্রাফিক্স ডিজাইনার এর দ্বারা সম্পন্ন করা হয়ে থাকে। গ্রাফিক্স ডিজাইন একটি বিশেষ ধরনের কাজ নয়, এটির ভিতরে অনেকগুলো কাজ জড়িত রয়েছে।দৈনন্দিন জীবনে যদি লক্ষ্য করি তাহলে গ্রাফিক্সের একটি প্রভাবও দেখা যায়।
ফ্রিল্যান্সার হিসেবে গ্রাফিক্স ডিজাইনের সব কাজ শেখার প্রয়োজন নেই। আপনি আপনার আগ্রহ বা দক্ষতার উপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট একটি কাজ বেছে নিয়ে ফ্রিল্যান্সিং জগতে লক্ষ লক্ষ ডলার আয় করতে পারেন। গ্রাফিক্স ডিজাইন সেক্টরে লোগো ডিজাইন, পোস্টার ডিজাইন, টি-শার্ট ডিজাইন, প্রোডাক্ট কভার ডিজাইন এবং ইউটিউব থামনেইল ডিজাইন উল্লেখযোগ্য কাজের মধ্যে রয়েছে। তাই প্রাথমিক অবস্থায় ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে জেনে এবং গ্রাফিক্স ডিজাইনের যে কোনো একটি বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করেই আপনি সফল হতে পারেন।
অবশ্যই, কিছুদিন পর সে ইনকাম করা শুরু করবে। বর্তমান ট্রেন্ড অনুযায়ী টি-শার্ট এবং লোগো ডিজাইনের উচ্চ চাহিদা রয়েছে মার্কেটপ্লেস এবং মার্কেটপ্লেসের বাইরে উভয় জায়গায়। সে যদি নিজেকে একজন সফল টি-শার্ট বা লোগো ডিজাইনার হিসেবে গড়ে তুলতে পারে, তবে সে একজন বিশেষজ্ঞ গ্রাফিক্স ডিজাইনার হিসেবে বিবেচিত হবে।
ওয়েব ডিজাইন এবং ওয়েব ডেভেলপমেন্ট
ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজের তালিকায় এই দুটি কাজ একে অপরের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত। শব্দগুলো শুনলেই বোঝা যায় যে এ ধরনের কাজ বিভিন্ন ওয়েবসাইট সংক্রান্ত। ওয়েব ডিজাইনাররা প্রধানত ওয়েবসাইটের চেহারা ও আকর্ষণীয় ডিজাইনের দিকে মনোযোগ দেন যাতে ভিউয়ার্স আকৃষ্ট হন। অন্যদিকে, ওয়েব ডেভেলপাররা ওয়েবসাইট তৈরি ও ডেভেলপমেন্টের কাজে নিযুক্ত থাকেন। তারা ওয়েবসাইটকে ব্যবহার উপযোগী এবং ডাইনামিক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন।
বর্তমানে বিভিন্ন কোম্পানি তাদের পণ্য বিক্রির জন্য অনলাইন প্ল্যাটফর্মে আগ্রহ প্রকাশ করছে। অনলাইনে বিক্রি করলে দোকান ভাড়া, কর্মচারী খরচ ইত্যাদির প্রয়োজন হয় না। তাই অনলাইন বিক্রি বর্তমানে খুবই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। আকর্ষণীয় এবং ব্যবহার উপযোগী ওয়েবসাইট তৈরি করার জন্য দক্ষ ওয়েব ডিজাইনার এবং ওয়েব ডেভেলপারদের প্রয়োজন।
আপনি শুনলে অবাক হবেন যে একজন ওয়েব ডেভলপার বা ওয়েব ডিজাইনার একটি ওয়েবসাইট তৈরি করার জন্য মার্কেটপ্লেসে এবং মার্কেটপ্লেসের বাইরে কমপক্ষে ৫০০ ডলার চার্জ করে থাকেন। বর্তমান সময়ে একটি পূর্ণাঙ্গ ওয়েবসাইট তৈরির জন্য এই পরিমাণ খরচ হয়। তাই ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজের তালিকায় ওয়েব ডিজাইন এবং ওয়েব ডেভেলপিং রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ব্লগিং এর কাজ
ব্লগিং এর মাধ্যমে অনেকেই মাসে লক্ষ লক্ষ টাকা আয় করছেন। ব্লগিং কাজটি একটি ব্লগ ওয়েবসাইটের সাহায্যে পরিচালিত হয়। একজন ব্লগার তার ওয়েবসাইটে বিভিন্ন বিষয়ের আর্টিকেল প্রকাশ করেন। ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসগুলোতে আর্টিকেল লেখার প্রচুর চাহিদা রয়েছে। আর্টিকেল লেখার জন্য লেখককে এমনভাবে লিখতে হবে যাতে পাঠক লেখার সাথে সহজেই সংযুক্ত হতে পারেন।
উপরের অংশে আমরা ফ্রিল্যান্সিং এবং এর কাজগুলো সম্পর্কে আপনাদেরকে ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। এর ফলে, আমাদের মধ্যে একটি অদৃশ্য সংযোগ স্থাপিত হয়, যা এসইও ফ্রেন্ডলি আর্টিকেলের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। একজন সফল আর্টিকেল রাইটার তখনই সার্থক হন যখন তার লেখা পাঠকেরা বুঝতে পারে এবং উপকৃত হতে পারে।
ফ্রিল্যান্সিংয়ের মাধ্যমে আপনি মাসে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অর্থ উপার্জন করতে পারেন। অনেক ব্লগ ওয়েবসাইটের মালিকরা প্রায়ই ভালো মানের আর্টিকেল রাইটারের সন্ধান করেন। তবে দক্ষ আর্টিকেল রাইটার খুঁজে পাওয়া কিছুটা কঠিন। আপনি যদি একজন ব্লগার তথা আর্টিকেল রাইটার হয়ে উঠতে পারেন, তাহলে ভবিষ্যতে অর্থনৈতিক চিন্তা থেকে মুক্ত থাকতে পারবেন।
(SEO) সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন
এসইও হল এমন একটি প্রক্রিয়া যা ওয়েবসাইটগুলোকে গুগলে উচ্চ র্যাঙ্কে আনতে সাহায্য করে। সার্চ ইঞ্জিনে ওয়েবসাইটের ভাল অবস্থান অর্জনের জন্য এসইও অপরিহার্য। ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে এসইওর কাজ করলে ভবিষ্যত উজ্জ্বল হতে পারে। যদিও শিখতে কিছুটা সময় লাগে কারণ এটি কিছুটা জটিল। তবে কঠিন কিছু নয়, এবং যদি মার্কেটপ্লেসে কাজ না পাওয়া যায় তবে নিজেই একটি ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারেন।
ফ্রিল্যান্সিংয়ে যাত্রা শুরু করতে চাইলে, নিজের আর্টিকেল প্রকাশ করে এবং সঠিকভাবে এসইও প্রয়োগ করে মাসে ভালো আয় করা সম্ভব। একজন নতুন ফ্রিল্যান্সার হিসেবে ফ্রিল্যান্সিং কাজগুলোর পাশাপাশি এসইও সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। আমরা ইতিমধ্যে ফ্রিল্যান্সিং এবং এর বিভিন্ন কাজ সম্পর্কে আলোচনা করেছি। এছাড়াও ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে আরো বিভিন্ন ধরনের কাজ রয়েছে।
আরো পড়ুনঃ
গ্রাফিক্স ডিজাইন সম্পর্কিত ফ্রিল্যান্সিং কোর্স শেষ করার পর, প্রথমে আপনাকে সেই কোর্স থেকে প্রাপ্ত জ্ঞান ও দক্ষতা প্রয়োগ করতে হবে। ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরের বিভিন্ন মার্কেটপ্লেস গুলির সম্পর্কে জানার পর, আপনার জন্য উপযুক্ত একটি মার্কেটপ্লেস চয়ন করতে হবে। উদাহরণস্বরূপ, Upwork একটি বিশ্ববিদ্যালয় পরিসেবা, আবার Fiverr এবং অন্যান্য ভাল মানের মার্কেটপ্লেস রয়েছে।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url